বর্তমান বিশ্ব প্রযুক্তিনির্ভর। সময়ের সঙ্গে তাল মিলিয়ে বিশ্ব এখন সবকিছুতেই ইন্টারনেটনির্ভর হয়ে পড়ছে। ক্যারিয়ারের ক্ষেত্রটাও এর বাইরে নেই। বর্তমানে ক্যারিয়ারের জন্য ইন্টারনেটের দ্বারস্থ হচ্ছে এ প্রজন্মের তরুণ-তরুণীরা। চাকরি খোঁজা থেকে শুরু করে পদোন্নতি, নিজের দক্ষতা বৃদ্ধি, নিজের মেধা ও প্রতিভা প্রকাশ করার সব কাজই এখন অনলাইনের মাধ্যমে সম্পন্ন করা যাচ্ছে।
এ বিষয়টি নিয়ে আইটিসেবা.নেট-এর তরুণ উদ্যোক্তা ফারজুল ইসলাম জানাচ্ছেন কিছু তথ্য-
অনলাইন মার্কেটপ্লেসগুলো থেকে কিভাবে আয় করা যায়?
ফারজুল ইসলাম: অনলাইনে ফ্রিল্যান্সার, আপওয়ার্ক, ফাইভআর-এর মতো অনেক সাইট রয়েছে যেখানে যে যা জানেন সেই কাজটিই করতে পারবেন। একজন কার্টুনিস্ট থেকে শুরু করে ডাটা এন্ট্রি, ছবি এডিট, লোগো ডিজাইন, ওয়েব ডিজাইন, গ্রাফিক ডিজাইনসহ যত ধরনের অনলাইনভিত্তিক কাজ রয়েছে সবই করতে পারবেন। এই কাজের জন্য শুধু কিছু পোর্টফোলিও আপলোড করে রাখলেই হয়। এর ফলে ক্লাইন্ট প্রোফাইল বা পোর্টফোলিও দেখে তার কাঙ্ক্ষিত কাজটি করিয়ে নেবে। এই সাইটগুলো বিশ্বস্ত, ফলে এখানে নিয়মিতই কাজ করা যায়। শুধু তাই নয়, একে ব্যবসা হিসেবে নিয়েও কাজ করছে অসংখ্য লোকজন।
ক্যারিয়ার গড়তে ওয়েব ও গ্রাফিক ডিজাইনিং-এর গুরুত্ব কতটুকু?
ফারজুল ইসলাম : অনলাইনে ক্যারিয়ার এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার আরেকটি মাধ্যম হচ্ছে ওয়েব ও গ্রাফিক ডিজাইনিং। শুধু তাই নয়, দেশে সরকারি বা বেসরকারি প্রতিষ্ঠান গুলোতেও এর চাহিদা দিনে দিনে বাড়ছে। এমনকি কারো যদি ওয়েব ডিজাইন এবং HTML সম্পর্কে জ্ঞান থাকে তাহলে ওয়েব ডিজাইনের পাশাপাশি এটিকে ব্যবসা হিসেবে নিতে পারেন। কেননা এখন বিশ্বে অনেকেই অনলাইনে ব্যবসা করছেন যারা অচিরেই ওয়েবসাইট খুলতে আগ্রহী। যাদের ওয়েবসাইট আছে তারাও আবার নতুন করে ওয়েব ডিজাইন করছেন। এমনকি প্রতিষ্ঠানের লোগো থেকে শুরু করে বিভিন্ন কাজে গ্রাফিক ডিজাইনারদের সরণাপন্ন হচ্ছেন। এছাড়াও অনলাইনে থিম ফরেস্ট, প্রিমিয়াম সাইটসহ এ ধরনের অনেক ই-কমার্স সাইট আছে যেখানে নিজের বানানো ওয়েব টেমপ্লেটটি কমিশনের ভিত্তিতে বিক্রি করা যায়। এমনকি একই টেমপ্লেট বহুবারও বিক্রি হয় এসব সাইটে। তাই এই বাজারটি ধরার এখনই মুখ্য সময়।
অনলাইন অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং কি?
ফারজুল ইসলাম: সাধারণত অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং হচ্ছে খুব দ্রুত এবং কম খরচে অনলাইনে টাকা উপার্জন করার সব থেকে ভাল উপায়। অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং এমন একটি ব্যবসা, যেখানে নিজের কোনো পূঁজি থাকার একদমই প্রয়োজন নেই। যেমন ধরুন বিশ্বে নাম করা আনলাইন মার্কেটপ্লেস বা প্রতিষ্ঠান Amazon.com। তারা তাদের ওয়েবসাইটে একটি অপশন রেখেছে Become an Affiliate। এখানে একটি অ্যাকাউন্ট খুলার পর, সেই অ্যাকাউন্ট থেকে অন্যের পণ্য বা সেবা সামাজিক মাধ্যম ফেসবুক, টুইটার, ইউটিউবসহ বিভিন্ন মাধ্যমে পণ্যের লিংক প্রচার এবং প্রচারণার মাধ্যমে বিক্রি করে দেয়া বা বিক্রি করতে সাহায্য করার মাধ্যমে যে কেউ সেটা থেকে নির্দিষ্ট হারে কমিশন পাবেন। এতে করে পূঁজি ছাড়া নিজের আয়ের উৎস অনেকাংশে বৃদ্ধি পায়। তাই বলা যায়, ইন্টারনেটের মাধ্যমে পণ্য বিক্রি করার যত উপায় আছে অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং হচ্ছে তন্মধ্যে অন্যতম কার্যকরী মাধ্যম।
নিজস্ব উদ্যাগে অনলাইন ব্যবসায় ক্যারিয়ার গড়া কি সম্ভব?
ফারজুল ইসলাম: বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির উন্নতির সঙ্গে তাল মিলিয়ে সচেতন ও দক্ষ হয়ে উঠছে সবাই। এখন আমাদের মতো তরুণরা অনেক আগে থেকেই ক্যারিয়ার নিয়ে ভাবনাচিন্তা শুরু করছেন। বিশ্বে অনলাইন ব্যবসার বিষয়টি দিনে দিনে বেশ জনপ্রিয় হয়ে উঠছে। বর্তমান আমাদের মতো অধিকাংশ তরুণরা নিজের ব্যবসাকেই নিজের ক্যারিয়ার হিসেবে গ্রহন করছেন। কেউ ফেসবুক পেজ বা গ্রুপে, আবার কেউ বড় পরিসরে নিজস্ব ওয়েবসাইটের মাধ্যমে। এই মুহূর্তে অনলাইনের সবচেয়ে জনপ্রিয় ব্যবসাই হচ্ছে ই-কমার্স বা অনলাইনের মাধ্যমে কেনা-বেচা। তাই বলা যায় সময়টা এখন আসলেই অনলাইন ব্যবসার। তবে হ্যাঁ, ই-কমার্স মার্কেটের বিকল্প নেই ভবিষ্যতে। এমনকি একটা সময় ই-কমার্স মার্কেটপ্লেস, অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং, ওয়েব ও গ্রাফিক ডিজাইনিং ছেলেদের পাশাপাশি মেয়েদের কর্মক্ষেত্রে তৈরীতে ব্যপক হারে গুরুত্ব বহন করবে।
ফেমাসনিউজ২৪.কম/কেআর/এস